ফটোগ্রাফি ও প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা (তৃতীয় অধ্যায়)

ফটোগ্রাফি ও প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা (তৃতীয় অধ্যায়)

ফটোগ্রাফি মূল্যবোধ
 
আগের দু’টা অধ্যায়ে আমি অনেক ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি, কিছু নেতিবাচক সাড়াও পেয়েছি, বোনাস হিসেবে ইনবক্সে কিছু মেসেজ পেয়েছি যাতে আমাকে বিভিন্ন চতুস্পদি প্রাণীর সাথে তুলনা করা এবং ‘পারলে’ ছবি তুলে দেখানোর আহ্ববান জানানো হয়েছে। আর্টিকেলগুলো আগে কিছুটা কনফিউজড ছিলাম আমি এই মেসেজটি পেয়ে শিউর হয়েছি আমি ঠিক লাইনেই আছি।
 

আগের লেখার প্রথম অধ্যায় ছিল আমজনতা আর ফটোগ্রাফারদের কিছু ভুল ধারনা নিয়ে, দ্বিতীয় অধ্যায় ছিল ফটোগ্রাফারদের কিছু ভুল ধারনা নিয়ে, যাতে অনেকটাই টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে। অনেক আম-পাবলিকের মাথার উপর দিয়ে গিয়েছিলো। এবারে আমি কিছু মূল্যবোধের সিরিয়াস ফাপর কপচাবো। যা মূলত আমজনতা কে উদ্দেশ্য করে।
 
কর্পোরেট কুত্তামিঃ প্রথমেই একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। পেশাগত ভাবে আমি যাবতীয় ভিস্যুয়াল মালামাল তৈরি করি (ভিডিও প্রোফাইল থেকে শুরু করে কমার্শিয়াল ডকুমেন্টারি, ক্রেডিট এনিমেশন কিংবা বিজ্ঞাপন, ইত্যাদি)। বাংলাদেশের অনেক নামকরা একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির একটি এনিমেশন ভিত্তিক প্রোফাইল বানানোর জন্য তাদের সাথে মিটিং এ বসি। তাদের চাহিদা এবং রুচি বুঝতে তাদের আগের করানো বিভিন্ন কাজ দেখছিলাম। তখন তাদের একটি ক্যালেন্ডার আমি হাতে পেলাম। মুগ্ধ হয়ে দেখলাম ক্যালেন্ডারটি সুন্দরবনের উপর করা। সুন্দরবনের অদ্ভুত সব ছবি নিয়ে। যে সময়টায় করা, তখন সুন্দরবন ও প্রাকৃতিক সপ্তাশর্য্ নিয়ে আমাদের অনেক আশা। আমি সেই ক্যালেন্ডারে যেসব ছবি দেখলাম, এত ভালো কোয়ালিটির ছবি আমি খুব কম দেখেছি। কোম্পানির চেয়ারম্যান অত্যন্ত গর্বিত আমাকে হা করে পাতা উল্টাতে দেখে। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম এত সুন্দর ছবিগুলো কার তোলা? উনি বললেন নেট থেকে কালেক্ট করা। আমি হা হয়ে গেলাম। উনাকে বললাম “এই ছবিগুলো একটা বা কয়েকজন মানুষ জীবন বাজী রেখে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গুষ্টি কিলিয়ে, দুনিয়ার ডাকাতের ডিপো সুন্দরবনে গিয়ে তুলেছে, না জানি কতদিন পায়ে হেঁটে এই ছবি তুলতে হয়েছিলো, আর আপনি নেট থেকে নামিয়ে দিয়ে দিলেন? আর এত বড় কোম্পানি হয়ে এত বড় কপিরাইট লঙ্ঘন করলেন কি বুঝে?” উনি উত্তর দিলেন যে শেষের পাতায় প্রায় অদৃশ্য ফন্টে ডিসক্লেইমারে লিখে দেয়া আছে, যে কোন ছবি স্বত্ব কোপানীর নয়। ব্যাস! আমি বাংলা সিনেমার আদর্শবান নায়কের মত আদর্শ কপচায়ে এর আগে অনেক কাজ হারিয়েছি, তাই এবার কথা বাড়াইনি। এত বড় প্যাঁচাল পারার উদ্দেশ্য এটাই বুঝানো যে ইন্টারনেটের যুগে মানুষের মূল্যবোধ কোথায় গিয়েছে দেখুন।
 
আমার পরিচিত যত ফটোগ্রাফার আছে, তাদের অধিকাংশই খুব ধনী পরিবারের মানুষ না, কিন্তু প্রচণ্ড প্যাশনেট ফটোগ্রাফি নিয়ে। ফটোগ্রাফি কিন্তু গরিব মানুষের শখ না, তাই তারা কিভাবে করে বিভিন্ন এক্সেসরিজ কেনার টাকা জোগাড় করেন, সেটা জিজ্ঞেস করলেই বুঝবেন। অনেককে চিনি, যারা ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করা পছন্দ করে না, শুধুমাত্র গিয়ার আপডেট করার জন্য মুখ বুজে ছবি তুলে যান। তাদের এতটা কষ্ট করে কেনা যন্ত্রপাতি, এতটা সাধনা করে শেখা ফটোগ্রাফির কি মূল্য থাকে যদি বিনা অনুমতিতে তাদের ছবির বাণিজ্যিক ব্যাবহার করে বড় কোম্পানিরা? যেই মানুষটা বা মানুষগুলো জীবন বাজি রেখে সুন্দরবনে গিয়ে ছবিগুলো তুলছিলেন তাদের কি খুঁজে বের করে ছবিটার প্রিন্টিং স্বত্ব কিনে নিলে বিশাল সেই কোম্পানিটার লস হয়ে যেতো? তারা ক্যালেন্ডারটা তৈরি করেছে প্রমোশনাল ম্যাটেরিয়াল হিসেবে, তার মানে সেই ক্যালেন্ডার তাদের পয়সা এনে দিচ্ছে। তবে যার ছবির কারণে ক্যালেন্ডারটা সুন্দর হল তাদের টাকা দিতে কেন অনীহা?
 
আমার ধারনা বিষয়টা চৌর্যবৃত্তির মনোভাব নিয়ে করা নয়। এটার মূল কারণ সেই কোম্পানি জানেনা একটা ছবি তুলতে একটা মানুষের কি লাগে। ভাবছে ছবি বলদের পাছা দিয়ে বের হয়। ছবি তোলা তো যে কেউ পারে, ক্যামেরা থাকলেই হয়। আর অনেকে ভাবেন, নেটে দিয়ে রাখা ছবি আল্লাহর ওয়াস্তে খয়রাত করা ছবি। নামাও আর লাগাও। প্রায় পুরোটাই জ্ঞানের অভাবে। তবে ধন্যবাদ জানাতে হয় অনেক বড় কোম্পানিকে, যারা বিজ্ঞাপনের জন্য প্রচুর ফটো-সেশন করান, যার ফলে অনেক ফটোগ্রাফার ছবি তোলাকে পেশা হিসেবে নিতে পারেন।
 
ব্যক্তিগত অপব্যাবহারঃ এ’তো গেলো বানিজ্যিক ভাবে অপব্যবহার, ব্যক্তিগত ভাবে যদি কারও ছবি ভালো লাগে, তার সেই ছবিটা ওয়ালপেপার হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তবে সেই ছবিটার মালিককে যদি অনুরোধ করেন, তবে উনি কি না করবেন? বরং আমার ধারনা ছবির মালিক খুশি হবেন, উৎসাহ পাবেন। তবে কেউ যদি ব্যক্তিগত ব্যবহারও করতে না দেন, তবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, আমার সাজেশন- “ঐ খাইষ্টা ব্যাডার ছবি নিয়েন না”।
 
ছবি কপিরাইটঃ যেহেতু আমার বড় ভাই, বোন এবং দুলাভাই সবাই ঘাগু উকিল, আমি কিছুটা আইন সম্পর্কে জানি, তবে সলিড কিছু বলতে পারছি না। কারণ আইন নিয়ে কথা বলতে চাইলে একদম সংবিধানের অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলা উচিত যেটা আমি পারবোনা। তবে যতটা বলার মত বলছি। ছবি, একটি ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি। এটি কপিরাইট করানো সম্ভব। ঢাকায় আগারগাও কপিরাইট অফিসে যোগাযোগ করুন। সেখানে একটা এ্যালবামে ত্রিশটা প্রিন্টেড ছবি ভরে একত্রে কপিরাইট করা যায়। ডিজিটাল যুগে এই মাইজভান্ডারী ফরম্যাট হলেও আশার কথা যে কপিরাইট করানো সম্ভব। কত টাকা লাগবে বললাম না, কারণ বাংলাদেশে সব কিছুতে সরকারি ফি এবং বেসরকারি ফি আছে। সব মিলিয়ে খুব বেশি পরবেনা। আমার জানা মতে বাংলাদেশের সংবিধানে ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নিয়ে খুব শক্ত আইন আছে। প্রয়োগ কতটা সেটা আমি বললাম না, দেশের হাল ভালোনা। এবং জেনে রাখা ভালো বাংলাদেশে ইন্টেলেকচুয়াল ভর্তি, তাই ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি আইন নিয়ে অনেক কনফিউশন আছে। কিছুটা ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘোলাটে করে রাখা, কিছুটা দায়িত্বপ্রাপ্ত-লোকের অযোগ্যতা, কিছুটা উপরি-প্রাপ্তির লোভে, এবং কিছুটা আলসেমি করে। তবে কপিরাইট করানো থাকলে আপনার ছবি খেয়ে দিয়ে কেউ হজম করতে পারবেনা। তবে কোনও বিশাল কোম্পানির বিরুদ্ধে কাইজ্জা করে কতটা সফল হবেন আমি বলতে পারলাম না। পূর্ব অভিজ্ঞতার দরুন আমি আমার ছবিগুলাতে বেয়াদ্দপ মার্কা ওয়াটার মার্ক দিয়ে রাখি।
 
ছবি তোলার ভব্যতা: অনেক ফটোগ্রাফার ভেবে থাকেন ক্যামেরা নিয়ে মানুষজনের ছবি তুললে সেই মানুষজন আবেগে আপ্লুতে হয়ে তাদের কণ্ঠ বাস্পরুদ্ধ হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে সত্যি হলেও অনেকেই বিরক্ত বোধ করেন। বিশেষ করে ক্যামেরা হাতে একটা ছেলের অনুমতি ছাড়া একজন মেয়ের ছবি তোলাটা অনুচিত। ইভ-টিজিং-বিরোধী আন্দোলনের যুগে পাবলিকের হাতে ঘারে গর্দানে কিমা কাবাব হয়ে যেতে দুই মিনিট ও লাগবেনা। তবে কোনও একটা অদ্ভুত কারণে ছেলেরা মেয়েদের অনুমতি-বিহীন ছবি তুলতে ইভ-টিজিং, কিন্তু মেয়েরা কি জন্য যেন ছেলেদের ছবি তোলার অধিকার রাখে। এই বাজে ধারা অবশ্য ছবি তোলার ক্ষেত্রেই না, অনেক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
 
যারা পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়াতে যান, মনে রাখবেন উপজাতিরা আমাদের মত না দিল্লাগি পছন্দ করে না। তারা আপনমনে চলতে ফিরতে পছন্দ করে। অনুমতি ছাড়া তাদের ছবি তুলবেন না। আপনার ক্যামেরার সাইজ দেখে ওরা মুগ্ধ হবেনা, অনেকেরই আত্মসম্মানবোধ আমাদের মত সভ্য(!)দের চেয়ে বেশি। তারা নিজেদের হাংরি-পিপল-পুওর-পিপল পরিচয় দিতে অপছন্দ করে। এমনকি ছোট্ট একটা শিশুরও অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা উত্তম। তবে অনেক ক্ষেত্রেই অনুমতি নিতে গেলে একটা ন্যাচারাল ছবি আর্টিফিশিয়াল হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কি করা উচিত সেটা আমি জানিনা, আপনারা জানলে আমাকে জানাবেন প্লিস। আগেভাগে ধন্যবাদ এই জন্য।
 
ধ্বংসাত্বক ন্যাচার ফটোগ্রাফিঃ আমি এক ভদ্রমহিলাকে চিনি, যে ফটোগ্রাফির উপর বিশেষ পড়াশোনা করেছে, এবং চমৎকার ছবি তুলে। প্রজাপতির উপর তার একটা অদ্ভুত সুন্দর গ্যালারী দেখে মুগ্ধ হয়ে জানতে চেয়েছিলাম এত সুন্দর পোজ দেয়া প্রজাপতি সে পেলো। উত্তর শুনে বেকুব হয়ে গেলাম। সব প্রজাপতি ধরে মেরে ম্যাচের কাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে পোজ দেয়ানো। একটা কাঠবিড়ালির ছবিও ছিল এভাবে করে তোলা। আমি বলছিনা যে এরকম সাইকো কাণ্ডকারখানা সবাই করে, কিন্তু আমাদের অনেকেই প্রাকৃতিক ছবি তুলতে গিয়ে নিজের অজান্তে প্রকৃতির ইয়ে মেরে বাসায় ফেরত আসি। চমৎকার একটি সুন্দর ছবি তুলে মনের আনন্দে বিড়ি জ্বালিয়ে প্যাকেটটা সেখানে ফেলার দরকার পরে না। কিংবা অনেকেই ফটোওয়াকে সদলবলে জঙ্গলে ঢুকে শান্ত একটা পরিবেশকে নগদে চকবাজার বানিয়ে ফেলেন। যদি ভোর বেলায় উঠে জঙ্গলে ঢুকে প্রকৃতির সাথে মিশে চুপচাপ ছবি তুলতে থাকেন তবে অনেক মজার মজার ছবি পাবেন। আমি সিলেটের এক জঙ্গলে সূর্য ওঠার আগে একলা হেটে বেশ কিছু ছবি তুলে ছিলাম, আমার তোলা সব ছবির মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ছবি সেগুলো (দেখতে চাইলে আমার ওয়েবসাইটে গিয়ে খুঁজুন Velvet moments ar Srimangal)। বিরাট দল করে ফটোওয়াক করার অনেক সুবিধা আছে যদিও অসুবিধা এই একটাই।
 
ক্যাপশন ম্যানিপুলেশনঃ অনেকে বলেন ছবি সত্যি বলে। ছবি সত্যি বললেও মনে ধান্দা থাকলে একটা ক্যাপশন লাগিয়ে দিয়ে দাবার চাল উলটে ফেলা যায়। সেটার উদাহরণ দেখতে আমাদের যে কোনও হরতালের কভারেজ ছবি দেখুন দু’টি আলাদা পত্রিকায়, একটি সরকারের চামচা আরেকটি বিরোধীদলীয় চামচা পত্রিকায়। একই ঘটনা দুই গল্প শুনবেন। একটি খুব সাধারণ ছবিকে ক্যাপশন দিয়ে খুব ইন্টারেস্টিং ছবি বানানো যায়, কিন্তু উদ্দেশ্যমুলক ভাবে ক্যাপশন দিয়ে মানুষকে ভুল চিন্তা করানো খুবি নিচুস্তরের অপরাধ। যদি সেটা করেন তাইলে মইত্ত্যাচুরা’র সাথে আপনার পার্থক্য থাকবে না।
 
অবহেলিত ওয়েডিং ফটোগ্রাফার: যদিও এই বিষয়টা নিয়ে তেমন কথা বলার নেই, কারণ দিন আস্তে আস্তে ভালোর দিকে যাচ্ছে, তবুও একটু না বললেই না। ফটোগ্রাফি একটি শিল্প, এবং ফটোগ্রাফাররা শিল্পী, এই জিনিসটা যারা মানেন না তাদের আর কথা বুঝিয়ে লাভ নাই। এখানে বলে রাখা ভালো আমি ফটোগ্রাফার বলেছি “ক্যামেরা-ওয়ালা ল্যাছড়া পোলাপান” না। পার্থক্যটা সহজেই বুঝবেন। যাই হোক, আমি আমার খুব কাছের ওয়েডিং ফটোগ্রাফার বন্ধুদের কাছে অনেক অদ্ভুত এক্সপেরিয়েন্স শুনেছি। বলে রাখা ভালো, আমার খুব কম বন্ধু আছে যারা ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসে, প্রায় সবাই’ই শুধুমাত্র কুইক মানি বলে করে। সেই শিল্পীদের প্রতি সাধারণ মানুষের মনোভাব দেখে অনেক লজ্জা লাগে। অনেকেই ওয়েডিং ফটোগ্রাফার কে পয়সা দিয়ে এনেছে বলে সঠিক সন্মানটা দেয়না। আমি এমনও শুনেছি খেতে বসার সময় একজন ফটোগ্রাফারকে হোস্ট বলেছিলও “ড্রাইভার ফটোগ্রাফার আর ক্যামেরার লোক পরে খাবেন”। এরকম অনেক ছোটবড় ঘটনা প্রায় প্রতিটা কাজেই তাদের ফেস করতে হয়। অনেকে ভাড়া করে আনা ব্যান্ডকেও একই ভাবে ট্রিট করে। এই ধরনের মনোভাবের মানুষ কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের সেটা তাদের মনোভাবেই বুঝা যায়। তবে অনেকে আছেন, শিক্ষিত পরিবারের শিক্ষিত মানুষজন, তারা মানুষের পেশা বুঝে প্রাপ্য সন্মান দিতে দ্বিধা বোধ করেন না। এতে উনারা ছোট হয়ে যাননা।
 
ডিজিটাল ম্যানিপুলেশন ও মূল্যবোধ:  এই বিষয়ে আমি বেশ অনেকগুলো ভালো আর্টিকেল জমিয়েছি। এখানে এটা নিয়ে পাকনামি করলাম না। পরে একটা আস্ত অধ্যায় লিখবো সময় করে, যাতে কতটুকু ম্যানিপুলেশন করলে এডিটেড, কতটুকুতে ম্যানিপুলেটেড আর কতটুকুতে এনহেন্সড হয় এ নিয়ে বিভিন্ন জ্ঞ্যানী ব্যাক্তিদের মতবাদ নাড়াচাড়া করবো।। তবে এই পয়েন্টটা এখানে যায় বলে ভরে দিলাম আরকি।
 
—————————–
আইন মানুষকে শেখানো যায়, চটকনা দিয়ে আইন প্রয়োগ করা যায়, কিন্তু মূল্যবোধ জিনিসটা সাপোজিটরি দিয়েও মানুষের ভিতর ঢুকানো যায়না। এই জিনিসগুলো মানুষ থেকে আশেপাশের পরিবেশ থেকে, পরিবার থেকে। পারিবারিক পরিবেশ কেউ নিজে বেছে নিতে পারেনা, কিন্তু নিজের বন্ধুবান্ধব-ভাইবেরাদার বেছে নেয়া যা। তাই মূল্যবোধ উন্নয়নের সবচেয়ে সহজ তরিকা নিজের সার্কেলটা সাবধানে বাছাই করা, টাউট-বাটপার পোলাপানের সাথে না চলা। উন্নত বিশ্বের ফটোগ্রাফাররা কি গিয়ার ব্যাবহার করছে, কি ছবি তুলছে সেটা জানার পাশাপাশি তাদের আচার ব্যাবহারটাও খেয়াল করা। বেছে বেছে পশ্চিমাদের নোংরামি ইম্পোর্ট না করে ভালো কিছু শিখার থাকলে যে কোনও জাতিকে অনুসরণ/অনুকরণ করা দোষের কিছুনা।
 
চামে দিয়ে একটি এ্যডভার্টাইজিং মাইরা নেই। স্ন্যাপয ম্যাগাজিন, বাংলাদেশের প্রথম ফটোগ্রাফি বিষয়ক ডিজিটাল ম্যাগাজিনের ২য় ইস্যু গত ১০ই জুন প্রকাশ পেয়েছে। বিনামূল্যে এই ম্যগাজিন পাওয়া যাবেwww.snapzmagazine.com এ। আমি এই ম্যাগাজিনের নগন্য একজন এডিটর। অনেকগুলো মানুষের অনেক এফোর্টের ফসল এই ম্যাগাজিন। আশা রাখছি সামনের দিনগুলোতে আরো সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে আমাদের এই ম্যাগাজিন। পরে দেখুন, ভালো লাগবে।
 
আমার এই আর্টিকেলগুলোতে লেখা সবকিছু একান্তই নিজস্ব মতামত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আকারের ধরা নিজে খেয়ে, অন্যকে খেতে দেখে এইগুলা শিখেছি। ইন্টারনেট থেকেও কিছু তথ্য নেয়া। ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে, ম্যান ইজ মর্টাল। যদি কোনও কিছু ভুল থাকে দয়া করে জানাবেন, আমি শুধরে নেবার চেষ্টা করবো।এবং অনুরোধ, ভুল বুঝবেন না, কাউকে গুতানোর জন্য লেখাটা না, জ্ঞ্যানদান করার জন্য ও না, কিছু ভাবনা শেয়ার করার জন্য লিখেছি, তাই ইনফরমাল।
 
জুনায়েদ সাব্বির আহমেদ
www.zunayed.com
০৮-০৬-২০১২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *